দুই দশকেরও অধিক সময় ধরে আবৃত্তি একাডেমির পথচলা । গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দু’দিনব্যপী আবৃত্তি উৎসবের উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এদিন দিলসাদ জাহান পিউলীর গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় রাজধানীর পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হয় আবৃত্তি একাডেমির ৫৮তম প্রযোজনা ”রুদ্ধশ্বাসের দিনগুলো”। এ প্রযোজনায় আবৃত্তির মাধ্যমে স্মরণ করা হয় ১৯৭১ সালের জগন্নাথ হলের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। আবৃত্তি করা হয় শহীদ জননী জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলো, রুদ্র মুহাম্মদ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর কনসেন্ট্রশন ক্যাম্প ও ড. রণ পেরী’র যুদ্ধশিশুসহ মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস স্মরণে বিভিন্ন কবিতা ও গল্প। ৫৮তম প্রযোজনায় অংশ নেন আবৃত্তি শিল্পী মৃন্ময় মিজান, মাসুদ আহম্মেদ, সারমিন ইসলাম জুঁই, শামীম আহসান, আহম্মেদ শুভ, হিমাদ্রী মোর্শেদ তাহমিনা, আব্দুর রহমান তারেক, আব্দুস সালাম, মো. ইসহাক আলী, হাসনাইন আনজুম, মো. আল-আমিন, জান্নাতুল ফেরদৌস মিলা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট আবৃত্তিজন অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারীকে আবৃত্তি একাডেমি পদকে ভূষিত করা হয়। তিনি তাঁর এই পদক আবৃত্তি চর্চা যারা করেন, তাদের সবাইকে উৎসর্গ করেন। আবৃত্তি একাডেমির পরিচালক মৃন্ময় মিজানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ।
ব্যঙ্গাত্মক ও কৌতুকপূর্ণ কথার কবিতায় আবৃত্তি, গান ও নাচ – এই তিনের মেলবন্ধনে অসাধারণ এবং ব্যতিক্রমী এক প্রযোজনার মঞ্চায়ন ঘটলো আবৃত্তি উৎসবের ২য় দিন (১৩ সেপ্টেম্বর,২০১৯) সন্ধ্যায় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে। বৃশ্চিক লগ্ন শিরোনামের এ প্রযোজনাটিতে উঠে এসেছে ব্যক্তি -সমাজ – সংসার এবং রাষ্ট্রের নানা অসঙ্গতি। কথাসাহিত্যিক ও আবৃত্তিশিল্পী মৃন্ময় মিজানের অসাধারণ এবং দুরূহ নির্দেশনায় মঞ্চায়িত প্রযোজনাটি বাংলাদেশের আবৃত্তি চর্চার ইতিহাসে একটি নতুন ধারার সূচনা করলো। আবৃত্তি একাডেমির ৫৯তম প্রযোজনা ছিল এটি। কিংবদন্তী কবি সিকান্দার আবু জাফরের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার প্রতি আবৃত্তি একাডেমির শ্রদ্ধা নিবেদন এই “বৃশ্চিক লগ্ন”। তাঁরই লেখা বিভিন্ন কবিতা নিয়ে প্রযোজনাটি গ্রন্থনাও করেছেন মৃন্ময় মিজান।
প্রযোজনায় অংশ নেন, আবৃত্তি শিল্পী মৃন্ময় মিজান, হিমাদ্রী মোর্শেদ তাহমিনা, আব্দুর রহমান তিতুমীর, আব্দুস সালাম, মো. ইসহাক আলী, হাসান মাহমুদ, হাসনাইন আনজুম, রওনক জাহান সাথী, সালাহউদ্দিন জামিল সৌরভ, হাফসা মাহমুদ, সুস্মিতা দত্ত, জান্নাতুল ফেরদৌস মিলা, তাহমিনা সুলতানা লিজা ও তাজরী-মিন শিমুল।
আবৃত্তি প্রযোজনা শেষে বিভিন্ন কর্মশালার উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র প্রদান করা হয়। এছাড়া বছরের সেরা আবৃত্তি সংগঠক, সেরা নিয়মিত সদস্য, সেরা আবৃত্তিকর্মী ও প্রতিশ্রুতিশীল আবৃত্তিশিল্পীকে বিশেষভাবে পুরুষ্কৃত করা হয়।
আবৃত্তি একাডেমির সাবেক পরিচালক মাসুদ আহম্মেদের সভাপতিত্বে প্রযোজনা পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন অধ্যাপক ড. ইনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর চেয়ারম্যান রামচন্দ্র দাস ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল।